বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনঃ
বাংলাদেশ সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১১৮ এর আওতায় বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন স্থাপিত হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের প্রধানকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলা হয়ে থাকে। বাংলাদেশের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১১৯ এ নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব বর্ণিত হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব হল রাষ্ট্রপতি ও সংসদে নির্বাচন পরিচালনা, নির্বাচনের জন্য ভোটার তালিকা প্রস্তুতকরণ, নির্বাচনী এলাকার সীমানা পুনঃনির্ধারণ, আইন কর্তৃক নির্ধারিত অন্যান্য নির্বাচন পরিচালনা (এর মধ্যে সকল স্থানীয় সরকার পরিষদ যেমনঃ ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা, সিটি কর্পোরেশন, উপজেলা পরিষদ, জেলা পরিষদ, পার্বত্য জেলা পরিষদ অর্ন্তভুক্ত) এবং আনুষঙ্গিক কার্যাদির সুষ্ঠু সম্পাদন। দায়িত্ব পালনে নির্বাচন কমিশন স্বাধীন থাকবেন এবং কেবল এ সংবিধান ও আইনের অধীন হবেন। নির্বাচন কমিশন দায়িত্ব পালনে সহায়তা করা সকল কর্তৃপক্ষের কর্তব্য।
বাংলাদেশের বিভিন্ন সাংবিধানিক নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কাজে নিয়োজিত প্রতিষ্ঠান। বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের পাশাপাশি মেয়র নির্বাচন, ইউনিয়ন পর্যায়ের বিভিন্ন নির্বাচনের দায়িত্ব পালন করে প্রতিষ্ঠানটি।
বাংলাদেশী জাতীয় পরিচয় পত্র
জাতীয় পরিচয় পত্র (সংক্ষেপে এনআইডি কার্ড, যা আইডি কার্ড নামে বহুল প্রচলিত) হল বাংলাদেশী নাগরিকদের জন্য একটি বাধ্যতামূলক নথি, যা ১৮ বছর পূর্ণ হওয়ার পর নথিভুক্ত হতে হয়। তথ্য নথিভুক্ত করণ ও আইডি কার্ড সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান হল বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন। ২০০৮ সাল থেকে বাংলাদেশে বায়োমেট্রিক আইডেনটিফিকেশন বিদ্যমান। সকল বাংলাদেশী যারা ১৮ বছর বয়স বা তার চেয়ে বেশির বয়সী তারা সকলে কেন্দ্রীয় বায়োমেট্রিক তথ্যভান্ডারের সাথে সংযুক্ত, যা বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন নির্বাচন ও অন্যান্য ক্ষেত্রে ব্যবহার করে। ২০১৬ সালের পুর্বে সাধারণ আইডেনটিটি কার্ড সরবরাহ করা হত যেখানে শুধুমাত্র আইডিধারী ব্যক্তির নাম, পিতা ও মাতার নাম, জন্ম তারিখ, আইডি নাম্বার, ছবি ও স্বাক্ষর উল্লেখ ছিল।
প্রচলন শুরুর তারিখ |
২২ জুলাই ২০০৮ |
প্রদানকারী সংস্থা |
|
প্রকার |
|
উদ্দেশ্য |
|
প্রদানের যোগ্যতা |
১৮ বছর বয়স (বাংলাদেশী নাগরিক) |
বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের এনআইডি উইং ২০১৬ সালের অক্টোবরে স্মার্ট জাতীয় পরিচয় পত্র উপস্থাপন করে। স্মার্ট কার্ডে একটি ইন্টারগ্রেট সার্কিট কার্ড (আইসিসি) সংযুক্ত আছে যা চিপ কার্ড নামেও পরিচিত। স্মার্টকার্ডে এ চিপ কার্ড মেশিনের সাহায্যে রিড করা যাবে। সেখানে নাগরিকের সব তথ্য সংরক্ষিত আছে। স্মার্ট কার্ডের ডিজাইনে বাংলাদেশের জাতীয় প্রতীকগুলো ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে মুক্তিযুদ্ধ, জাতীয় পাখি, শাপলা ফুল, চা বাগান, স্মৃতিসৌধ ইত্যাদি।
স্মার্ট এনআইডি কার্ড |
|
দেশ |
|
প্রধান ব্যক্তিত্ব |
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম, এনডিসি, পিএসসি[১] |
উদ্বোধন |
২ অক্টোবর ২০১৬ |
২০০৭ সালে বুয়েটের আইআইসিটি বিভাগের তৎকালীন বিভাগীয় প্রধান ডঃ এস এম লুৎফর কবির ইভিএম তৈরীর প্রকল্প তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে জমা দেন। পাইল্যাব বাংলাদেশ নামে একটি ইভিএম প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান প্রকল্প প্রস্তাবনার সাথে জড়িত ছিলো। মূলত একই বছর ঢাকা অফিসার্স ক্লাবের কার্যকরী সংসদ নির্বাচনে ইভিএম পদ্ধতির সফল ব্যবহারের কারণে তারা সরকারের কাছে আবেদন করেন যেন এই পদ্ধতিতে দেশের সকল নির্বাচনে ভোটগ্রহণ করা হয়। কিন্তু তখন ছবি সংবলিত ভোটার তালিকা তৈরীর কাজ শেষ না হওয়ায় প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হয়নি।[২] এরপর নির্বাচন কমিশনার এটিএম শামসুল হুদার নেতৃত্বাধীন কমিশন ২০১০ সালে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে পরীক্ষামূলক ভাবে ১৪টি ভোট কেন্দ্রে ইভিএম ব্যবহার করে ভোটগ্রহণ করা হয় এবং এতে সফলতা আসে। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরির কাছ থেকে ইভিএম গুলো নেওয়া হয়েছিলো। কিন্তু পরবর্তীতে কাজী রকিবউদ্দীন আহমেদের নেতৃত্বাধীন কমিশন ইভিএমগুলো রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ব্যবহার করতে গেলে বিপত্তি বাঁধে। একটি মেশিনে হঠাৎ ত্রুটি দেখা যায়। প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান এই ত্রুটির সমাধান বের করতে পারেন নি। ফলে প্রায় সাড়ে ১২শ’টি ইভিএমকে বাতিল ঘোষণা করে দেওয়া হয়।[৩] পরবর্তীতে কেএম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন কমিশন নতুন করে ভোটগ্রহণ পদ্ধতিটি চালু করার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করেন। কমিশন বিদেশ থেকে উন্নতমানের ইভিএম ক্রয় করে এবং দাবী করে যে এই নব্য মেশিনগুলো পূর্বের চেয়ে অধিক কার্যকরী। ফলশ্রুতিতে ২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাসে রংপুর ও ২০১৮ সালের মে মাসে খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে দুইটি করে ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে ইভিএম পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। এই ধারাবাহিক সফলতায় একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এক তৃতীয়াংশ আসনে ইভিএম চালু করার বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন ঘোষণা দিয়েছে। তবে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছে।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস